Succero Executive Resources Limited

Kader Arcade, 3rd Floor
33 Mirpur Road, Science Laboratory
Dhanmondi, Dhaka 1209, Bangladesh

Hotline: +8801770009944
Phone: +880 2 44612152, +880 2 44612153
Email: contact(at)succero.com.bd

Saturday to Thursday
(11:00 AM to 7:00 PM)
Holiday (On appointment)

INQUERY

Leave your details below for query or information

Registration

IELTS
British Council
IDP
PTE
OET
ISAT

করোনা পরিস্থিতি বিশ্বকে এমনভাবে আঁকড়ে ধরেছে যে, দিনরাত সর্বক্ষণ এটি আমাদের তাড়া করে ফিরছে। কোথাও আমরা স্থির হতে পারছি না। অর্থাৎ আমাদেরকে আসল যুদ্ধের সাথে সাথে এক সুদূরপ্রসারী মনস্তাত্বিক লড়াইও চালিয়ে যেতে হচ্ছে। যেকোন বৈশ্বিক মহামারীতে এরূপ হওয়াটাই স্বাভাবিক । তবে দিনশেষে আমরা যতই আতঙ্কিত হই না কেন একটা নতুন আশা নিয়ে অপেক্ষায় থাকি যেন আগামীকালটি আরো একটু ভাল হয়। এই আশাবাদ আমাদের বিষন্নতাকে কাটিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলতে প্রেরণা যোগায়।
এখন আসি যাঁদের হৃদরোগ আছে তাদের যদি করোনা ইনফেকশন হয় তাহলে কী করবার আছে।
হৃদরোগীরা দু’ভাবে আক্রান্ত হতে পারেন:
১। যাঁরা আগে থেকে হৃদরোগে ভুগছিলেন।
২। যাঁরা করোনা ইনফেকশন নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে নতুন করে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
যাঁরা আগে থেকে হৃদরোগে ভুগছেন:
যাঁদের হৃদরোগ আছে তবে হার্টের পাম্পিং ফাংশান ভালো তাঁদের সমস্যা কম। তাঁরা যেসব ওষুধ নিয়মিত খেতেন তা চালু রাখতে হবে। সামান্য জ্বর, সর্দি, কাশি কিন্তু শ্বাসকষ্ট নেই তাঁরা বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিবেন। সম্ভব হলে প্রেসার ,নাড়ির গতি,তাপমাত্রা পরীক্ষা করবেন। খাদ্য স্বাভাবিক খাবেন, পানি পর্যাপ্ত খাবেন, সতেজ ফলমূল, শাকসব্জি প্রচুর খাবেন।
যাঁদের কোন উপসর্গ নেই লকডাউন অবস্থায় ঘরের ভেতরে তিরিশ মিনিট খালি পেটে হাঁটবেন। সম্ভব হলে বাড়ির ছাদে রোদের মধ্যে হাঁটবেন। তবে সামাজিক/শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখবেন।
যদি পরিস্থিতি খারাপ হয় যেমন- জ্বর বেড়েই চলছে, শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, প্রেসার ওঠানামা করছে তাহলে ডাক্তারকে ফোন করুন। তাঁর নির্দেশ মত নির্দিষ্ট হাসপাতালে যান। ডাক্তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা যেমন- CBC, Xray chest ইত্যাদি করে সিদ্ধান্তে আসবেন যে, আপনার হাসপাতালে ভর্তি লাগবে কিনা।
ভর্তির পর করণীয়:
ভর্তির পরে চিকিৎসা পদ্ধতি পরিস্থিতি অনুযায়ী আপডেট করতে হবে। এখানে রোগীর কাজ হল স্বাস্থ্যকর্মীদের সাথে সহযোগিতা করা, তাঁদের নির্দেশনা মেনে চলা।
যদি রোগীর প্রেসার , পালস, অক্সিজেন মাত্রা স্বাভাবিক থাকে তাহলে হাইকেয়ার/করোনা ওয়ার্ডে রেখেই চিকিৎসা করা যাবে। অবশ্যই সেটি হতে হবে করোনা নিবেদিত ওয়ার্ড যেখানে পূর্ণ পিপিই নিরাপত্তা থাকবে। রোগীর ইসিজি, সম্ভব হলে বেডসাইড ইকো, ট্রেপোনিন মাত্রা, CBC, Xray chest করে দেখা উচিত । সুযোগ থাকলে procalcitonin, CRP করা যেতে পারে। এগুলো ফলো করলে আমরা বুঝতে পারব কোন্ রোগীর আইসিইউ/সিসিইউ-এর সাপোর্ট লাগতে পারে।
ডাক্তারদের করণীয় :
বুকের এক্সরে তেমন খারাপ না কিন্তু রোগী হঠাৎ হার্ট ফেইল্যুর ডেভলপ করতে পারে। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তে দেখা গেছে যে, প্রায় ২০% রোগী রেসপাইরোটরী ফেইল্যুর ছাড়াই হঠাৎ হার্ট ফেইল্যুর ডেভলপ করে। এর কতগুলো কারণ আছে: ক) করোনার প্রভাবে যে সিস্টেমিক প্রদাহ সৃষ্টি হয় তার প্রভাবে স্টেবল প্লাক(চর্বির দলা) আনস্টেবল বা ভঙ্গুর হয়ে ফেটে যেতে পারে। ফেটে গেলে কোয়াগুলেশান চক্র এবং অনুচক্রিকা সক্রিয় হয়ে করোনারী রক্তনালী ব্লক করে হার্ট অ্যাটাক করতে পারে। খ) সিস্টেমিক বা স্থানীয় প্রদাহে হার্টের মাংসপেশির প্রদাহ শুরু হতে পারে, ফলে হার্ট মাসল দু্র্বল হয়ে ফেইল্যুরে চলে যেতে পারে। গ) করোনা ভাইরাস সরাসরি হার্ট মাসল দখল করে (direct invasion) তা ধ্বংস করতে পারে। ফলে রোগী সরাসরি হার্ট ফেইল্যুর ডেভেলপ করতে পারে।
অর্থাৎ আপাতঃ দৃষ্টিতে রোগীর রেসপাইরেটরী ফেইল্যুর না থাকলেও কিছু কিছু রোগী হঠাৎ করে হার্ট ফেইল্যুর ডেভেলপ করতে পারে। এ বিষয়টি চিকিৎসকদের নজরে রাখতে হবে যাতে রোগী হঠাৎ করে মৃত্যুর দিকে ধাবিত না হয়।
যেসব রোগী হার্ট অ্যাটাক নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হবেন তাঁদের চিকিৎসাও বিশেষ পদ্ধতিতে করতে হবে। যদি কোনো রোগীর করোনা সংক্রমণের কোন লক্ষণ না থাকে তাঁকে আমরা প্রচলিত গাইডলাইন অনুযায়ী চিকিৎসা করব।
কিন্তু যেসব রোগী করোনা সংক্রমিত এবং NSTEMI হবে তাঁদেরকে আমরা প্রচলিত গাইডলাইনভিত্তিক চিকিৎসা দিব। অর্থাৎ LMWH সহ অন্যান্য প্রচলিত চিকিৎসা।
যাঁরা STEMI গ্রুপে পড়বেন তাঁদেরকে আমরা লাইটিক ( thrombolytic) চিকিৎসা দিব। সম্ভব হলে tenectiplase দিয়ে, না পারলে streptokinase দিব।
পারতঃপক্ষে ক্যাথল্যাবভিত্তিক অর্থাৎ জরুরুি অ্যানজিওপ্লাস্টি বা রিং লাগানোর পদ্ধতিতে যাব না। পরিস্থিতি উন্নতি হলে প্রয়োজনে আমরা একমাস পরে অ্যানজিওগ্রাম/অ্যানজিওপ্লাস্টি করে পরবর্তী চিকিৎসা বিধিবদ্ধ করব।
করোনার প্রতিকার ওষুধ কী:
যেহেতু এটি একটি বিশেষ RNA virus বাহিত রোগ তাই সঠিক প্রতিকার হবে সুনির্দিষ্ট এন্টি-ভাইরাল ওষুধ প্রয়োগ করা। সত্যিকার অর্থে এখন পর্যন্ত কোন সুনির্দিষ্ট এন্টি-ভাইরাল ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। এত অল্প সময়ে সেটা সম্ভবও নয়। একটি ওষুধ বাস্তব প্রয়োগের আগে অনেকগুলো ধাপ পেরিয়ে আসতে হয়। তার জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। তা সত্বেও কিছু কিছু HIV চিকিৎসার ওষুধ করোনা চিকিৎসায় প্রয়োগ করে কিছু কিছু ফল পাওয়া গেছে। তবে সর্বশেষ Ravipiravir নামে একটি এন্টি-ভাইরাল ওষুধ বাজারে এসেছে যা অপেক্ষাকৃত বেশি কার্যকর। তবে শতভাগ কার্যকর নয়।
এছাড়া ম্যালেরিয়ার ওষুধ ক্লোরোকুইন এবং এন্টিবায়োটিক এজিথ্রোমাইসিন ওষুধ নিয়ে সীমিত কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়েছে যার ফলাফল তেমন আশাব্যঞ্জক নয়। তবে এই বিপদের মুহূর্তে খড়কুটো আঁকড়ে ধরার মত যা হাতের কাছে পাওয়া যাচ্ছে তাই নিয়ে আমাদের চেষ্টা করে যেতে হবে।
প্রতিরোধ করব কীভাবে?
যেকোন রোগের চিকিৎসায় প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। ভাইরাল রোগের প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হল ভ্যাকসিন। পৃথিবীব্যাপী যত গবেষণা এবং বিনিয়োগ হয়েছে মানুষকে মারার অস্ত্র তৈরীর পেছনে তার সামান্যভাগও হয়নি মানুষকে বাঁচানোর জন্য গবেষণার পেছনে। তাই এই বৈশ্বিক মহামারী আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, একটি অতি সামান্য জীবাণুর বিরুদ্ধে মানবজাতি কত অসহায়। আশা করা যায় যে, পৃথিবীর নেতৃবৃন্দের নতুন করে বোধোদয় ঘটবে।
সবকিছু ঠিকঠাকভাবে চললে আশা করা যায় আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে বাজারে একটি কার্যকর ভ্যাকসিন আমরা পাব।
এখন কী করণীয়?
যেহেতু করোনা ভাইরাসটি একটি মনুষ্যবাহিত রোগ তাই মানুষকে পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারলেই ভাইরাসটি ছড়াতে পারবে না এবং নির্দিষ্ট সময় পরে এটি মরে যাবে। নিয়ম মত হাত ধোয়া , কফথুতু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, অযথা সার্জিক্যাল মাস্কের পেছনে না ছুটা ইত্যাদি কয়েকটি সহজ নিয়ম মেনে চললেই আমরা নিরাপদে থাকব। বিশ্বব্যাপী করোনার যে মহাঢেউটি উঠেছে তা একদিন নিশ্চিত থেমে যাবে। চীনের উহান সেই আশাব্যঞ্জক বার্তাই আমাদের দিচ্ছে।
সরকারের আশু করণীয় কী?
আমাদের কিছুকিছু ভুলত্রুটি বিচ্যুতির ফলে ইতিমধ্যে করোনা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এখান থেকে উত্তরণের উপায় হল আগামী এক/দুই মাস পরিপূর্ণ লকডাউন করে ভাইরাসের চলাচলের মাধ্যমকে অকার্যকর করে দেয়া।
প্রতিদিন সারাদেশে কমপক্ষে ১০,০০০ পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারকে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইসিইউ বেড এবং জীবনরক্ষাকারী ভেন্টিলেটর যোগাড় করতে হবে। এখন যা আছে তার পঞ্চাশগুন বেশি বেড এবং ভেনিটিলেটর নিশ্চিত করতে হবে। ১০ হাজার আইসিইউ স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণের বিশদ পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন এখনই শুরু করতে হবে। আগামী তিনমাসের জন্য ৫০ লক্ষ পিপিই এর ব্যবস্থা করতে হবে।
সরকারী বেসরকারী সকল হাসপাতালকে সমণ্বিত করে একটি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে তুলতে হবে। সেই যুদ্ধের ফ্রন্টলাইনে অবশ্যই থাকবে স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেই স্বাস্থ্যকর্মীদেরকে উপযুক্ত যুদ্ধাস্ত্র বর্ম খাদ্য পানীয় রসদ দিয়ে সুসজ্জিত করার উপর নির্ভর করবে আপনি যুদ্ধে জিতবেন নাকি হারবেন।
কিন্তু আমাদের তো জেতা ছাড়া অন্যকোন পথ নেই!

লেখক:
ডাঃ মাহবুবর রহমান
সিনিয়র কনসালটেন্ট (কার্ডিওলজি), মেডিসিন বিশেষজ্ঞ
 ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হসপিটাল, ঢাকা

Leave a comment

Need more information?

We can call you and help with your problem, just leave us your phone number.